1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : Staff Reporter : Staff Reporter
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৫ পূর্বাহ্ন

Translate in

ঘুরতে গিয়ে ট্রাক চাপায় নিহত ৭ বাকীরা কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বেডে

রিপোর্টার
  • আপডেট : শুক্রবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৩
  • ৮৩ বার দেখা হয়েছে

নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর শিবপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ব্যক্তিরা ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার এসবি নিটিং নামের একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা। ওই প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুবাদে তারা সবাই একসঙ্গেই চলাফেরা করতেন। শুক্রবার ছুটির দিনে পরিকল্পনা অনুযায়ী দলবেধে সিলেটে ঘুরতে যাচ্ছিলেন তারা। বেপরোয়া গতির পাথরবাহী ট্রাকের চাপায় এখন তাদের কারো লাশ মর্গে, বাকীরা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শিবপুর উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ঘাসিরদিয়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাথরবাহী ট্রাক দ্রুতগতিতে আরেকটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গেলে মাইক্রোবাসটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটে। এতে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসটির ৭ যাত্রী নিহত ও ৪ জন গুরুতর আহত হন।
নিহত সাতজন হলেন, টাঙ্গাইলের দেলদোয়ারের মীর মোতাহারের ছেলে মো. সবুজ (৩২), ঝালকাঠির রাজাপুরের আব্দুল গণি হাওলাদারের ছেলে আল আমিন হাওলাদার (২৭), বরিশালের মুলাদীর মজিবর সিকদারের ছেলে আরিয়ান সিকদার (২৫), জামালপুরের সরিষাবাড়ীর দুখু মিয়ার ছেলে রাজু আহমেদ (৩৭), টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের মৃত আইয়ুব খানের ছেলে আল আমিন খান (২৭), মাদারীপুরের কালকিনির তোফায়েল হাওলাদারের ছেলে আবদুল আওয়াল (৪০) ও কুষ্টিয়ার বাবুল মিয়া (৪০)। এছাড়া আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের ডাকনাম জানা গেছে। তারা হলেন, সাকি, পারভেজ ও দোয়েল।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে আসেন এসবি নিটিং কারখানাটির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. শিহাব উদ্দীন। তিনি জানান, চালক ও আরেকজন বাদে মাইক্রোবাসটিতে অবস্থান করা ৯ জনই তার কর্মী। তাদের মধ্যে ৮ জনই প্রতিষ্ঠানের মার্কেন্ডাইজার ও একজন ফেব্রিকস সেকশনের স্টোরকিপার। গত কিছুদিন ধরেই তারা সিলেটে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। সে অনুযায়ী গতকাল রাত ১১টার দিকে আশুলিয়া থেকে চালকসহ মোট ১১ জন ওই মাইক্রোবাসে চড়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে নরসিংদীর শিবপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস বলছে, গতকাল দিবাগত রাত তিনটার কাছাকাছি সময়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পাথরবোঝাই একটি ট্রাক ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। অন্যদিকে মাইক্রোবাসটি সিলেটের দিকে যাচ্ছিল। ঘাসিরদিয়া এলাকায় অন্য একটি গাড়িকে দ্রুতগতিতে ওভারটেক করতে গিয়ে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় সামনে চলে আসা মাইক্রোবাসের সঙ্গে ট্রাকটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মাইক্রোবাসের পাঁচ যাত্রী নিহত হন। খবর পেয়ে দ্রুত ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ৬ জনকে উদ্ধার করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালে পাঠান এবং নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেন। হাসপাতালটিতে নেওয়ার পথেই আরও দুজনের মৃত্যু হয়। জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং আহত চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করেন। পরে রাতেই মোট সাতজনের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় হাইওয়ে পুলিশ। ১০০ শয্যা বিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহত ৬ জনকে রাতে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে দুজনকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অন্য চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

ইটাখোলা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ কবির হোসেন ভূঁইয়া জানান, দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাস ও পাথরবোঝাই ট্রাক জব্দ করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। ট্রাকটির চালক আটক করা গেলে মাইক্রোবাসের চালক পালাতক বলে দাবি পুলিশের। নানা মাধ্যমে তাদের স্বজনদের কাছে খবর জানানো হচ্ছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। জানতে চাইলে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অনির্বাণ চৌধুরী জানান, ট্রাকের চাপায় হতাহত ব্যক্তিরা সবাই মাইক্রোবাসের যাত্রী ছিলেন। নিহত ৭ জনের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। তাদের স্বজনরা এলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২০